৯ম/১০ম শ্রেনীতে পড়ার সময় (২০১০/২০১১) সালে আমার লেখা ধারাবাহিক “রহস্যভেদ” সিরিজের প্রথম গল্প ।
.
রহস্যভেদ-১
.
রবিন-মুবিন দুই ভাই ।রবিন নাইনে আর মুবিন টেনে ।রবিন সবসময় নিজেকে বড় গোয়েন্দা ভাবে (!!!)।তাদের একমাত্র অবিবাহিত মামা সায়েম ।মামাটা আবার যেমন তেমন মামা নয় ।যখন তখন কয়েক মাসের জন্য গায়েব হয়ে যায় ।এইতো মাস দুয়েক আগে হঠাত গায়েব ।আজ এসেছে রবিনদের বাসায় ।
রবিনঃ এত দিন কোথায় ছিলে মামা ?
মামাঃ বললে তোরা বিশ্বাস করবি না ।
মুবিনঃ মামা প্লিজ সত্যি করে বল তুমি কোথায় ছিলে ।
এবার মামা তার দুর্ধর্ষ এডভেঞ্চার এর কথা শুরু করলেন ।
মামাঃ আমি মঙ্গোলিয়ায় চলে গিয়েছিলাম ।হাতে টাকা পয়সা না থাকায় বাধ্য হয়ে এক জাহাজে কাজ নিলাম ।আমার কাজ ছিল জাহাজটি কখন কোন জায়গা দিয়ে যাচ্ছে তা লিখে রাখা ।প্রথম প্রথম কাজটা ভালই লাগত ।পরে একঘেয়ে লাগতে শুরু করে ।এক সময় জাহাজ মঙ্গোলিয়ার সমুদ্রবন্দরে পৌঁছায় ।
রবিন-মুবিনঃ তারপর ?
মামাঃ (পানি খেতে খেতে) সমুদ্র তীরের সৌন্দর্য দেখে তো আমি অবাক ।এত্ত সুন্দর যে তোরা ভাবতেও পারবি না ।দুইদিন ছিলাম ওইখানে ।লোকজন একেবারে কম, কোথাও যানজট নেই ।সুন্দর গোছানো শহর ।সেই জাহাজে করেই পরে ফিরে আসলাম ।দেশে এসেই প্রথমেই তোদের এখানে ।
মুবিনঃ আবার যখন যাবে আমাদের নিয়ে যেও প্লিজ ।আমাদের খুব শখ জাহাজে উঠব ।
মামাঃ কিন্তু আমি তো চাকরি বাদ দিয়েছি ।পানি আর আমাকে আকর্ষণ করতেছে না ।এরপর বনে যাব ।
মুবিন মুখ গোমড়া করে বসে থাকে ।রবিন আনমনে কি যেন ভাবছিল ।
মামাঃ জাহাজ ভ্রমণটা আসলে খুব মজার ছিল ।অবশ্য তোরা কি করে বুঝবি , তরা তো কখনো জাহাজ ই দেখিস নি ।
রবিন এবার মুখ খুলল-
রবিনঃ আমরা কখনো জাহাজে চড়িনি ঠিক, কিন্তু এটাও সত্য যে তুমিও জাহেজেও চড়নি আর মঙ্গোলিয়াতেও যাও নি ।
মামাঃ মা…মা…মানে???
রবিনঃ আসলে তুমি খুব ভাল গল্প বানাতে পারো ।তোমার খেল খতম ।
মামাঃ তুই কি করে বুঝলি ???
.
পাঠক, রবিনের জন্য তো এটা কোন ব্যাপারই না ।আপনি কি ধরতে পেরেছেন সূত্রটা, যার মাধ্যমে
রবিন বুঝতে পারল যে মামা মিথ্যা কথা বলতেছে ।
.
.
.
.
.
.
.
উত্তরঃ মঙ্গোলিয়ায় কোন সমুদ্র বা নদী বন্দর নেই ।তাই নদী পথে মঙ্গোলিয়া যাওয়া সম্ভব না ।অতএব, মামা মিথ্যা বলছে ।